Header Ads

হাসিনাকে বাংলাদেশে ফেরাবে ভারত,মাত্র কয়েক মুহূর্তেই ‘আশ্রয়’

 Sheikh Hasina's First Reaction After Bangladesh Ouster: Former PM Says Her  Father Sheikh Mujibur Rahman, Other Martyrs Grossly Insulted - Oneindia News

১৯৭৫ সালের ১৫ অগস্ট, ভোর ৬টা। বার্লিন থেকে ফোন গেল বেলজিয়ামের ব্রাসেলসে। যাঁর কাছে ফোন এল, তাঁর বাড়িতে তখন দুজন অতিথি। ফোন ছাড়ার পর তিনি দুই অতিথিকে ডেকে তুললেন এটা বলতে যে ‘আপনারা এখন বিদায় হোন। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব চলে যান’। অতএব ব্রাসেলস হয়ে জার্মানি। সেখান থেকে সোজা দিল্লি। ১৯৭৫-এর অগাস্ট থেকে টানা ৬ বছর ভারতে রাজনৈতিক আশ্রয়েই ছিলেন ওই দুজন। সঙ্গে তাঁদের দুই কন্যা ও বাকি পরিবার।

বুঝতেই পারছেন, শেখ হাসিনা ও তাঁর স্বামীর কথা বলা হচ্ছে। ব্রাসেলসে বাংলাদেশি রাষ্ট্রদূত সালাউল্লা হকের বাড়িতে ছিলেন হাসিনারা। সেখানে ফোন করে মুজিব হত্যার খবরটা দেন জার্মানিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত হুমায়ুন রশিদ চৌধুরী। ১৯৭৫-এ যা হয়েছিল, ২০২৪-এও তার পুনরাবৃত্তি হয়েছে। দুবারই এক ঘণ্টারও কম সময়ে হাসিনার জন্য দরজা খুলেছে ভারত।

ভারত কি শেখ হাসিনা ও তাঁর পরিবারকে আশ্রয় দিতে রাজি? সেদিন ভারতের প্রধানমন্ত্রীর কাছে জানতে চেয়েছিলেন জার্মানিতে নিযুক্ত তত্‍কালীন বাংলাদেশি রাষ্ট্রদূত। ইন্দিরা গান্ধী উত্তর দিতে এক মিনিটও নেননি। এবার ভারতের কাছে যখন একই প্রশ্ন এল, তখনও সরকার ভাবাভাবির পথে যায়নি। তবে ১৯৭৫-এ যেটা হয়নি, সেটা এই ২০২৪-এ হতে চলেছে। শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশে প্রত্যার্পণের জন্য ভারতের কাছে আবেদন করতে চলেছে বাংলাদেশের বর্তমান সরকার। যতটা খবর পাওয়া যাচ্ছে, একদিকে বাংলাদেশ সরকার আবেদন জানাবে। অন্যদিকে একই আবেদন জানাবে বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইম ট্রাইবুনাল, BICT। হাসিনার বিরুদ্ধে গণহত্যা, নাগরিকদের উপর অত্যাচার, গুমখুনের মতো অভিযোগে গুচ্ছ গুচ্ছ মামলা হয়েছে। এইসব মামলার বিচারে বিশেষ বেঞ্চ গঠন করেছে BICT। তাদের যুক্তি, বাংলাদেশের আইনে এই ধরণের মামলায় সশরীরে হাজিরা দিতে হবে হাসিনাকে। তাই তাঁর দেশে ফেরা জরুরি। আবার বাংলাদেশের বর্তমান সরকারের আলাদা যুক্তি। তাঁদের বক্তব্য, প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ও আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। এইসব অভিযোগেও মামলা হয়েছে। এজন্যও হাসিনার বাংলাদেশে ফেরা দরকার।

২০১৩ সালে ভারত-বাংলাদেশ বন্দি প্রত্যার্পণ চুক্তি হয়েছিল। ২০১৬ সালে চুক্তিতে নতুন একটা ধারা যোগ করা হয়। যার ফলে প্রত্যার্পণের প্রক্রিয়া আরও সহজ হয়। এখানে বলা হয়, একটি দেশের যে কোনও আদালতের গ্রেফতারি পরোয়ানা থাকলে, সেটাই যথেষ্ট। তখন একটি দেশ নির্দিষ্ট কারোর প্রত্যর্পণ চাইলে অন্য দেশ সেই ব্যক্তির প্রত্যর্পণে বাধ্য। সম্ভবত চুক্তির এই ধারাকেই হাতিয়ার করবে বাংলাদেশের বর্তমান সরকার।

ভারত তাহলে কী করবে? আইনজ্ঞ ও কূটনৈতিকদের প্রত্যেকেই একমত। এমনটা যে হবে, সেটা কেন্দ্র আগেই আঁচ করেছিল। এবং ভারতের প্ল্যান এ, প্ল্যান বি তৈরি। বাংলাদেশে কাজ করেছেন এমন এক প্রাক্তন কূটনীতিক বললেন যে শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশে প্রত্যর্পণের কোনও সম্ভাবনাই নেই। ওদেশের বর্তমান সরকারও সেটা জানে। সব জেনেও আমাদের উপর চাপ দেওয়ার জন্য ওরা এসব করছে। তাঁর সাফ কথা, প্রত্যর্পণ চুক্তির ৬ নম্বর নিয়ে যাঁরা লাফাচ্ছেন, তাঁরা ৮ নম্বর ধারাটাও পড়ে দেখুন। এখানে স্পষ্ট বলা আছে, রাজনৈতিক কারণে বা উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে কারোর বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে বলে মনে হলে প্রত্যর্পণের অনুরোধ খারিজ করা যাবে। শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ১৯ দিনে ৬০টিরও বেশি মামলা হয়েছে। মানে দিনে গড়ে তিনটিরও বেশি। কারা মামলা করেছে, কেন করেছে? এতেই স্পষ্ট। ওই প্রাক্তন কূটনীতিকের বক্তব্য, বাংলাদেশ প্রত্যর্পণের অনুরোধ করুক না! আমরা তৈরিই আছি।

 

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.